নওগাঁ প্রতিনিধি ॥ নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার ঘোষনগর ও নজিপুর ইউনিয়নে তিনটি ভোটকেন্দ্রে ভোট গণনা নিয়ে পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, অস্ত্র ছিনতাই ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় পত্নীতলা থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। এতে ১১৩ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত দুই থেকে আড়াই হাজার ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলায় প্রধান অভিযুক্ত আসামি ঘোষনগর ইউনিয়ন পরিষদ স্বতন্ত্র (আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী) চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ফারজানা পারভীনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বুধবার পত্নীতলা উপজেলার ঘোষনগর ইউনিয়নের ঘোষনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কমলাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র এবং নজিপুর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটগ্রহণের পর গণনা ও ফলাফল ঘোষণা বিলম্বিত এবং সংশ্লিষ্ট ভোটকেন্দ্রের প্রিসাডিং কর্মকর্তারা ফলাফল ঘোষণা না করেই কেন্দ্র ত্যাগ করার চেষ্টা করে। এ সময় কেন্দ্রগুলোর আশপাশে থাকা কয়েক হাজার মানুষ পুলিশ, আনসার ও ভোটগ্রহণের দ্বায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের পথ রোধ করে।
এ সময় ভোটের দ্বায়িত্বে থাকা স্ট্রাইকিং ফোর্সের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক আব্দুল গণি ও পত্নীতলা অফিসার ইনচার্র্জ সঙ্গীয় পুলিশ সদস্য নিয়ে তাঁদেরকে উদ্ধার করতে যায়। উত্তেজিত জনতা ঘোষনগর কেন্দ্রের কাছে একটি পুলিশ পিকআপ ও রিকুইজিশন করা একটি মাইক্রোবাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শটগান থেকে ২৮ রাউন্ড গুলি নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষের সময় একজন পুলিশ সদস্যের কাছ থেকে একটি শটগান ও ২০ রাউন্ড গুলি ছিনতাই করে দুবৃর্ত্তরা। রঘুনাথপুর ভোটকেন্দ্রের কাছে কর্তব্যরত ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা, পুলিশ ও আনসার সদস্যদের উদ্ধার করতে গিয়ে পুলিশের স্ট্রাইকিং ফোর্সের সদস্যদের সাথে স্থানীয় জনগণের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ১১১ রাউন্ড গুলি নিক্ষেপ করে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
পত্নীতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুল আলম শাহ বলেন, পুলিশের ওপর হামলা, গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও অস্ত্র ছিনতাইয়ের অভিযোগে বৃহস্পতিবার ১১৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও অনেককে আসামি করা হয়েছে। ওই মামলায় ঘোষনগর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ফারজানা পারভীনকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। তাঁকে রাতেই ঘোষনগর ভোটকেন্দ্র এলাকা থেকে আটক করা হয়। পুলিশের কাছ থেকে ছিনতাই হওয়া অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার এবং এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকি আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।